২০২৫ সালের ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল চার মুখ
শেষ হতে চলেছে ২০২৫ সাল। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এই বছরটি ছিল অনেক স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তেমন বড় সাফল্য না এলেও, চারজন খেলোয়াড়ের অসামান্য পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের হৃদয়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
হামজা দেওয়ান চৌধুরী: ফুটবলে নতুন জীবনের স্পন্দন
ইংলিশ ফুটবলে খ্যাতি অর্জনকারী হামজা দেওয়ান চৌধুরী এখন বাংলাদেশের ফুটবলার হিসেবে পরিচিত। ২৬ মার্চ ভারতের বিপক্ষে তার ঐতিহাসিক অভিষেক ম্যাচ ছিল একটি গৌরবময় মুহূর্ত। যে বাংলাদেশি ফুটবল ছিল মৃতপ্রায়, হামজার ম্যাজিক নৈপুণ্য তাকে নতুন জীবন দিয়েছে।
শিলংয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়ানকাপ বাছাই পর্বে হামজার অন্তর্ভুক্তিতে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। ঢাকা স্টেডিয়াম কানায় কানায় ভরে যায় তাকে দেখার জন্য। ৫৪ বছরের ইতিহাসে জাতীয় দলে অসংখ্য ফুটবলার খেলেছেন, কিন্তু হামজা পুরোপুরি ব্যতিক্রম।
আমিরুল ইসলাম: হকিতে বিশ্ব রেকর্ড
হকিতে বাংলাদেশের কেউ বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলবেন তা ছিল ধারণার বাইরে। জুনিয়র বিশ্বকাপে আমিরুল ইসলাম যা করেছেন তা পৃথিবীর অন্য কেউ অর্জন করতে পারেননি। অভিষেক বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে পাঁচটিতেই হ্যাটট্রিক করে তিনি হকির যেকোনো বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত রেকর্ড গড়েছেন।
ছয় ম্যাচে ১৮ গোল করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন আমিরুল। অভিষেক বিশ্বকাপেই সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার হাতে ওঠে তার। এক বিশ্বকাপ খেলেই আমিরুল এখন বিশ্ব হকির অন্যতম আলোচিত মুখ।
মুশফিকুর রহিম: ক্রিকেটে ইতিহাস
বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার গৌরব অর্জন করেছেন মুশফিকুর রহিম। ঐতিহাসিক এই টেস্টটি আবার রাঙিয়েছেন সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরির মাধ্যমে। ২৫ বছরের টেস্ট ক্রিকেটে এমন কীর্তি স্বপ্নই ছিল।
আফঈদা খন্দকার: নারী ফুটবলের অগ্রদূত
২০২৫ সালটা নিঃসন্দেহে নারী ফুটবলারদের স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আফঈদা খন্দকারের যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতিহাসে প্রথমবার নারী জাতীয় ফুটবল দলের এশিয়ানকাপ চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। তার নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-২০ দলও এশিয়ান কাপে চূড়ান্ত পর্বে খেলবে।
মিয়ানমারে বাছাই পর্বে শক্তিশালী দলগুলোকে পেছনে ফেলে প্রথমবার এশিয়ান ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে অংশ নেবে বাংলাদেশ। এক বছরে তিন শিরোপার অধিনায়ক আফঈদাকে ঘিরে প্রশংসা তো হবেই।
নতুন বছরে এই চার তারকার কাছ থেকে নতুন চমকের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। তাদের সাফল্য প্রমাণ করে যে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও দেশপ্রেম থাকলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা বিশ্বমানের পারফরম্যান্স দিতে পারেন।